ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় তেলঙ্গানা রাজ্যের সাঙ্গারেড্ডি জেলার পাসামিলারাম শিল্প এলাকায় একটি রাসায়নিক কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণে অন্তত ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও ৩৫ জন। সোমবার সকালে সিগাচি কেমিক্যালস নামের ওই কারখানায় ঘটে যায় মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনা।
স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, বিস্ফোরণের সময় কারখানাটিতে প্রায় ৯০ জন শ্রমিক কাজ করছিলেন। এখন পর্যন্ত চারজনের পরিচয় শনাক্ত করা গেলেও বাকিদের শনাক্তে চেষ্টা চলছে। বিস্ফোরণের পর কারখানার ছাদ উড়ে গিয়ে প্রায় ১০০ মিটার দূরে গিয়ে পড়ে এবং অনেক মরদেহ ধ্বংসস্তূপের নিচে ছিটকে পড়ে।
প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, রাসায়নিক বিক্রিয়ার কারণেই ওষুধ তৈরির কাজে ব্যবহৃত উপাদান বিস্ফোরিত হয়। তবে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত নিশ্চিতভাবে কিছু বলা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
দুর্ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি এক্স (সাবেক টুইটার)-এ এক পোস্টে বলেন, “সাঙ্গারেড্ডির কারখানায় আগুনে প্রাণহানির ঘটনায় আমি গভীরভাবে শোকাহত। নিহতদের পরিবারকে প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় ত্রাণ তহবিল থেকে ২ লাখ রুপি এবং আহতদের ৫০ হাজার রুপি করে সহায়তা দেওয়া হবে।”
তেলঙ্গানার স্বাস্থ্যমন্ত্রী দামোদর রাজানরসিং জানিয়েছেন, ছাদ উড়ে গিয়ে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া কারখানার বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকা মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
এদিকে, ভয়াবহ এই দুর্ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত ও জবাবদিহি চেয়ে সরকারকে চাপ দিচ্ছে বিরোধী দল ভারত রাষ্ট্র সমিতি (বিআরএস)। শোক প্রকাশ করেছেন তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী রেবন্ত রেড্ডি ও রাজ্যপাল জিষ্ণু দেববর্মাও।
স্থানীয়রা জানান, বিস্ফোরণের শব্দে পুরো এলাকা কেঁপে ওঠে। ছুটে গিয়ে দেখা যায়, কালো ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন পুরো কারখানা, ছাদ উড়ে গিয়েছে অনেক দূরে, ভেতরে অগ্নিকাণ্ড। দমকল বাহিনী দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে এবং ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করে।
এই দুর্ঘটনা ভারতের শিল্প নিরাপত্তা ব্যবস্থার ওপর নতুন করে প্রশ্ন তুলছে।